পাওনা টাকা আদায় করবেন যেভাবে
জরুরী প্রয়োজনে কাউকে টাকা ধার দিয়েছেন। ধার নেবার সময় অঙ্গিকার করেছিল কয়েক দিনের মধ্যেই আপনার পাওনা শোধ করে দিবে। কিন্তু, কিছুদিন পার হবার পর আপনি যখন লাজুক ভাবে টাকাটা ফেরত চাইলেন তখন দেনাদার বিভিন্ন কাকতালীয় ঘটনা শুনিয়ে আপনাকে ইমোশনাল বানিয়ে দিল।
আজ-কাল করতে করতে অনেক সময় পার হবার পরও ফেরত পাননি আপনার টাকা। কোথায় আপনি সওয়াবের আশায় আমাকে ঋণ দিলেন, সেখানে আপনি দেনাদারের পিছনে পিছনে ছুটতে হচ্ছে পাওনা টাকা ফেরত পাওয়ার জন্য।
আমাদের সমাজে এটা খুবই পরিচিত ঘটনা। কথায় আছে, “মানুষ চিনতে চাইলে তাকে টাকা ধার দাও” আবার “লেনদেনে হয় বন্ধুত্ব নষ্ট” । এসব কথা তখনই মনে হয়, যখন আমরা এ রকম বিপদে পড়ি। আমাদের মধ্যে অনেকে আছে লজ্জায় না করতে পারিনা। লেনদেনের সময় লজ্জায় টাকা গুণেও নেই না, কাগজপত্র করাতো পরের কথা।
কিন্তু যখন নিজেদের ভুল বুঝতে পারি তখন আর সময় থাকে না। আদালতের মাধ্যমে টাকা আদায় করতে হলে কাগজ-পত্র দরকার প্রমাণ হিসাবে কিন্তু আমাদের কাছে সেটা থাকেনা। এমন পরিস্থীতির স্বীকার হলে কিভাবে পাওনা টাকা উদ্ধার করবেন সে বিষয় জানাতেই এই লেখা।
টাকা ধার দেবার আগে যা করবেন
১। চুক্তিপত্র করুন
কাউকে টাকা ধার দেবার প্রয়োজন হলে অবশ্যই ৩০০ টাকা স্ট্যাম্প পেপারে চুক্তিপত্র করবেন। চুক্তিতে টাকা ধার দেবার তারিখ, ফেরতের তারিখ, কিভাবে ফেরত দিবে, ফেরত না দিলে কি করতে পারবেন, একবারে পরিশোধ করবে নাকি কিস্তিতে পরিশোধ করবে সব লিখে রাখবেন। যাকে টাকা দিচ্ছেন তার পরিবারের সদস্য কাউকে স্বাক্ষী রাখবেন।
চুক্তিপত্র সম্পাদনের পর তা নোটারীর মাধ্যমে রেজি: করে নিবেন। সম্ভব হলে, জামানত হিসাবে স্বাক্ষর করা ব্যাংক চেক রাখবেন।
২।স্বাক্ষরিত চেক নিন
যাকে টাকা দিচ্ছেন বা যার জিম্মায় টাকা দিচ্ছেন তার সাথে কোন কারনে যদি চুক্তিপত্র করা সম্ভব না হয় তবে তার স্বাক্ষরিত চেক রাখুন। কোন কারণে টাকা ফেরত না দিলে চেকের মামলা করতে পারবেন। চেকের বিপরীতে একটি কাগজে এনকেশমেন্ট এর তারিখ ও স্বীকারোক্তি লিখে তাতে পাওনা গ্রহীতার স্বাক্ষর নিয়ে রাখুন। চেক দাতার নাম, পিতার নাম ও ঠিকানা ভাল করে যাচাই করে নিন। ব্যাস, আর কিছু লাগবে না। আমাদের দেশে মামলা হলে খুব কম ক্ষেত্রেই চেকের টাকা আর দেনমোহরের টাকা পরিশোধ করে দেয়া ছাড়া বিবাদী বা আসামীর আর কোন উপায় থাকেনা। কাজেই, স্বাক্ষর করা চেক রাখুন।
৩। জামানত নিন
ধরুন কেউ ২০ হাজার টাকা ধার চাইলো। বিনিময়ে সে একই মূল্যের কোন জিনিস জামানত দিতে চাচ্ছে, নির্ধিদায় জামানত নিন। যদিও ব্যাপারটা শোভনীয় না তবুও নিরাপদ অনেক। জামানত গ্রহণে কখনো ইতস্তত বোধ করবেন না।
আইনানুগ ব্যবস্থা নিবেন যেভাবে
পাওনা টাকা উদ্ধারের জন্য আপনাকে দেওয়ানী আদালতে মামলা করতে হবে। একজন আইনজীবী এ কাজে আপনাকে সাহায্য করবেন। দেওয়ানী আদালতে পাওনা টাকা ফেরত পেতে আপনাকে মানি স্যুট বা অর্থের মামলা করতে হবে।
অন্যদিকে প্রতারণা ও আত্বসাৎের জন্য ফৌজদারী আদালতে মামলা করবেন। ফৌজদারী মামলায় আপনাকে আদালত সরাসরি টাকা প্রদান করবেনা, আসামীর জেল-জরিমানা হবে। আসামী জেল-জরিমানা থেকে বাঁচতে আপোষে পাওনা পরিশোধ করে থাকে।
আবার, মামলা করলেই টাকা ফেরত পাবেন, তা কিন্তু নয়। সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে মামলা প্রমাল করতে হবে আপনাকে।
শেষ কথা
ঋণগ্রস্ত অবস্থায় মৃত্যু হলে সে জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না, এমন কি সে মৃত্যু যদি শহীদি মৃত্যু হয় তবুও। এজন্য রাসুলুল্লাহ (সা:) মৃত ব্যক্তির সম্পদ তার উত্তরাধিকারদের মধ্যে বণ্টনের আগে সর্ব প্রথম মৃতের ঋণ পরিশোধ করার ব্যাপারে জোর তাগিদ দিয়েছেন।
কেননা, আল্লাহ্র পথে শহীদ হওয়া ব্যক্তিও তার ঋণের কারণে জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না। (মুসনাদ আহমাদ, হাদিস: ২২৪৯৩)।
LET US HELP YOU
Consult with our Specialist Lawyer
Phone- 01929125100
E-mail – [email protected]
See Credentials: Linkedin Portfolio AIN BISHAROD– (A Legist Law Firm)